জিরো বাউন্ডারি কবিতার পঞ্চম সংখ্যার জন্য লেখা জমা দেওয়ার লাস্ট ডেট মে মাসের ১০ তারিখ। দুটো কবিতা বা কবিতা বিষয়ক লেখা নিজের এক কপি ছবি সমেত পাঠিয়ে দিন আমাদের ইমেলে-0boundarykabita17@gmail.com

বিপ্লব সরকার


ধূসর চুলের ইতিহাস 

              
সাম্রাজ্যপতনের পরও ভগ্নাবশেষ ছুঁয়ে থাকে
যে নারী বা পুরুষ
তাঁর ধূসর চুলে ইতিহাস পুনরুদ্ধার হয়


অক্ষরে অক্ষরে বাসা বাঁধে অনুভব

পৃথিবীর যাবতীয় সন্ধিবিচ্ছেদের পর
ছোট হতে থাকে সমস্ত দিন-ক্ষণ-তারিখ
চোখে লেগে থাকা উহ্য সম্পর্কগুলোর সংস্পর্শে


পরমাণুজোট ভেঙ্গে গেছে, সে বহুদিন...
একেকটা বিক্ষিপ্ত পলাশের গন্ধে এখনো সুখ
হাতড়ে বেড়ায়
আমার ধূসর চুলের বৃদ্ধা ঠাকুমা


প্রাণহীন প্রাণ নিয়ে তাঁর বেঁচে থাকা
নতজানু হয় চেতনার ঘর
কত ঝরাপাতার আলাপন, ঝড় তুলছে
সাদা সুতির বুনন বরাবর


শিকড়ের টান আঁকড়ে ধরে পড়ে থাকা
টিনের চাল, বাঁশের খুঁটি
ছাউনি দেওয়া ঠাকুরঘর কিভাবে তাঁর
রন্ধ্রে জাগিয়ে রাখে নিত্যদিন এক
ঘুম-স্বপ্নের প্রতীক্ষা
এসব ভাবতে ভাবতে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে
এক একটা প্রকাণ্ড অপাংক্তেয় কবিতা
লালচে টিনের বেড়া বেয়ে গড়িয়ে নামে
দৃঢ় দাঁড়িয়ে থাকা পায়ের প্রতীকী ক্লান্তি


উঠোনজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পাতার
মর্মর ধ্বনি থেকে
ভেসে আসে অশরীরী আবহ
পুরুষত্ব নাড়িয়ে যায় আধ্যাত্ম চরিত্রগুলো


অতএব, আমার নির্জনপ্রবাসী ঠাকুমা
আর তাঁর নির্জনতা - কেউ একা নয়
এখানে ব্যাকরণের শব্দগুলো জ্বলতে থাকে নিঃশব্দে
এবং এক তরুণ জিজ্ঞাসুর রঙিন ক্যানভাস থেকে
খুলে পড়তে থাকে লব্ধ পদার্থবিদ্যার সূত্রসমূহ


রান্নাঘরে ঠাকুমা এখন আমার জন্য
দু'কৌটো চাল বসিয়েছে
দেখছি উনুনের উপর পুড়ে যাচ্ছে আমাদের অতি পরিচিত বাগান
আঁচটুকু তার এসে পড়ছে আবছায়া কাঁচের উপর


গলে যেতে যেতে ভাবছি
কিভাবে উপলব্ধি লুকিয়ে রাখেন প্রকৃতি তাঁর
বিভঙ্গ জুড়ে...




1 comment: